সমুদ্রপাড়ে আটকা পড়লো দেড়শতাধিক তিমি
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
১৯-০২-২০২৫ ০১:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৯-০২-২০২৫ ০১:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
তাসমানিয়া রাজ্যের এক সমুদ্রতটে ১৫০টিরও বেশি ফলস কিলার হোয়েল (ডলফিন প্রজাতির তিমি) আটকা পড়েছে। দেশটির পরিবেশ সংস্থা জানিয়েছে, উদ্ধারকর্মীরা জীবিত তিমিগুলোকে রক্ষার জন্য লড়াই করছেন। যদিও তাদের হাতে সীমিত সময় রয়েছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে তাসমানিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজ্যের রাজধানী হোবার্ট থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে, উত্তর-পশ্চিম উপকূলের আর্থার নদীর কাছে এ বিপর্যয় ঘটেছে। ঘটনাস্থলে বিশেষজ্ঞদের পাঠানো হয়েছে এবং তারা উদ্ধারের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে কাজ করছেন।
তাসমানিয়া পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের সংযোগ কর্মকর্তা ব্রেন্ডন ক্লার্ক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমাদের অনুমান, তিমিগুলো ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগে আটকা পড়েছে। মোট ১৫৭টি তিমির মধ্যে মাত্র ৯০টি এখনও জীবিত রয়েছে। তবে তিনি জানান, এই তিমিগুলোকে পুনরায় সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
তিনি আরও বলেন, তিমিগুলোকে সরাসরি সাগরে ফিরিয়ে দেওয়া অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, কারণ এতে আমাদের উদ্ধারকর্মীদের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। দুর্গম তটরেখা, প্রতিকূল সমুদ্র পরিস্থিতি এবং উদ্ধার সরঞ্জাম সরবরাহের সমস্যা এই উদ্ধার কার্যক্রমকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জোসলিন ফ্লিন্ট জানান, তার ছেলে মঙ্গলবার মধ্যরাতে প্রথম তিমিগুলোকে আটকে থাকতে দেখেন। তিনি বলেন, পানির ঢেউ বারবার এসে তাদের ওপর আছড়ে পড়ছিল, তারা ছটফট করছিল। পরে অনেকেই বালির নিচে চাপা পড়ে মারা যায়। কিছু ছোট তিমির বাচ্চাও ছিল, আর একপাশে বড় তিমিগুলো পড়ে ছিল। পুরো দৃশ্যটাই হৃদয়বিদারক।
ফলস কিলার হোয়েল একপ্রকার সামুদ্রিক ডলফিন, যেগুলো দেখতে অনেকটা ওরকা বা কিলার হোয়েলের মতো। এই প্রজাতির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬.১ মিটার (২০ ফুট) পর্যন্ত হতে পারে এবং ওজন ৫০০ কেজি থেকে ৩ মেট্রিক টন পর্যন্ত হয়। ১৯৭৪ সালের পর এবারই প্রথম তাসমানিয়ার সমুদ্রতটে এই প্রজাতির তিমির দল আটকা পড়ল। সেই সময়, স্ট্যানলি অঞ্চলে ১৬০টির বেশি তিমি সমুদ্রতটে উঠে এসেছিল।
এই তিমিগুলোর আটকা পড়ার কারণ এখনও নিশ্চিত নয়। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন কারণে তিমির দল সমুদ্রতটে চলে আসতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে দিকভ্রান্ত হয়ে পড়া, অসুস্থতা, বার্ধক্য, আঘাত, শিকারি প্রাণীর হাত থেকে পালানোর চেষ্টা কিংবা বৈরী আবহাওয়া।তাসমানিয়া সরকারের পরিবেশ বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সব তিমিই সংরক্ষিত প্রাণী, এমনকি মৃত তিমিগুলোর ক্ষেত্রেও আইন প্রযোজ্য। সেগুলোতে কেউ হস্তক্ষেপ করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে মৃত তিমিগুলোর দেহ পরীক্ষা করছেন, যাতে এই বিপর্যয়ের পেছনে প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা যায়। এদিকে, উদ্ধারকর্মীরা এখনও জীবিত তিমিগুলোকে রক্ষা করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স